কৃষি তথ্য ও চাষাবাদ প্রক্রিয়া, ছাদে বা টবে চাষ

ছাদের টবে বা হাফ ড্রামে জামরুল চাষ পদ্ধতি

অত্যন্ত সুমিষ্ট ফল জামরুল খেতে কার না ভালো লাগে। ভিটামিন-বি২ সমৃদ্ধ এই ফলে যথেষ্ট পরিমাণে জল থাকায় ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রেও এই ফল অত্যন্ত উপকারী। এছাড়াও জামরুলে আমিষ, খনিজ লবণ, ভিটামিন সি, লৌহ ও ক্যারোটিন প্রচুর পরিমানে রয়েছে। জামরুলের চাষ আমাদের দেশে প্রচুর পরিমানে হয়। এছাড়াও বহু সৌখিন মানুষ বাড়িতেও জামরুলের চাষ করে থাকেন। টবে বা ছাদেও জামরুল চাষ করা যায়। আয়রন, ক্যালসিয়াম, সালফার, পটাশিয়াম সমৃদ্ধ এই ফলে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন-সি রয়েছে। কোষ্ঠ্যকাঠিন্যর মতন রোগ জামরুল খেলে কমে। ত্বকও জামরুল খেলে ভালো থাকে। বাত কমাতে এবং চোখের নিচের কালি দূর করতেও জামরুলের জুড়ি মেলা ভার। ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য জামরুল অত্যন্ত উপকারী একটি ফল হিসাবে বিবেচিত হয়।

জামরুলের জাত

বারি জামরুল-১, বারি জামরুল-২, বারি জামরুল-৩, থাই জামরুল, রোজ আপেল, বাউজামরুল-১, বাউজামরুল-২, বাউজামরুল-৩ ইত্যাদি। জামরুল লাল, সাদা, গোলাপি, গোলাপি সবুজ প্রভৃতি রঙের হয়ে থাকে।

Available in our store

2 Litter Premium Quality Transparent Sprayer Machine

Original price was: ৳ 580.00.Current price is: ৳ 480.00.each

2L Manual Sprayer Machine

Original price was: ৳ 400.00.Current price is: ৳ 320.00.each

2L Premium Sprayer Machine

Original price was: ৳ 450.00.Current price is: ৳ 350.00.each

3 Litter Premium Sprayer Machine

Original price was: ৳ 800.00.Current price is: ৳ 700.00.

Aci Bioferti – Liquid Seaweed Extract

Price range: ৳ 85.00 through ৳ 160.00

Aci Bumper Bonemeal Fertilizer – 1kg

Original price was: ৳ 100.00.Current price is: ৳ 85.00.

ছাদের টবে বা হাফ ড্রামে জামরুলের চাষ

বাড়ির চারপাশে কোনো খোলা জায়গা না থাকলে ছাদে বড় টব বা হাফ ড্রামেও জামরুল চাষ করা যায়। মে মাস থেকে জুলাই মাস জামরুল চাষের উপযুক্ত সময়। এই সময়ে গাছ লাগালে ভালো ফলন পাওয়া যায়। প্রথমে টব বা হাফ ড্রামের তলদেশে অতিরিক্ত পানি নিষ্কাশনের জন্য ১ ইঞ্চি ব্যাসের ৪/৫টি ছিদ্র করে নিয়ে ছিদ্রগুলোর ওপর মাটির ভাঙ্গা টবের টুকরো বসিয়ে দিতে হবে। মে মাসের মধ্যেই অর্ধেক দোআঁশ মাটি ও অর্ধেক পচা গোবর বা জৈব সার মিশিয়ে হাফ ড্রামের দুই তৃতীয়াংশ ভরাট করতে হবে। আকার ভেদে প্রতিটি হাফ ড্রামে আনুমানিক ৫০-১০০ গ্রাম মিশ্রসার প্রয়োগ করে মাটির সাথে ভালোভাবে মিশিয়ে দিতে হবে। তবে ড্রামের ওপরের অন্তত ২ ইঞ্চি জায়গা খালি রেখে সার মাটি দিয়ে ড্রাম ভরাট করতে হবে। সার মাটি ভরাটের ১৫দিন পর হাফ ড্রামের মাঝখানে চারাগাছের মাটির বল পরিমাণ মাপের গর্ত করে গর্তের মাঝখানে চারা/কলমটি লাগাতে হবে। চারা লাগানোর পর হালকা সেচ দিতে হবে। ছোট ও ফলন্ত গাছে প্রতি বছর বর্ষার আগে রাসায়নিক সার দিলে উপকার পাওয়া যায়। ফলবান প্রতিটি গাছে বছরে ১ কেজি গোবর, ৫০ গ্রাম সরিষার খৈল, ১০০ গ্ৰাম ইউরিয়া, ৫০ গ্রাম টিএসপি ও ৫০ গ্রাম এমওপি সার গাছের গোড়া থেকে একটু দূরে চারদিকের মাটির সাথে নিড়ানি দিয়ে মিশিয়ে দিতে হবে। এসব ঝামেলা মনে হলে বছরে ২ বার ছাদবাগানের ড্রামে গাছ প্রতি ৪-৮টি সিলভা মিক্সড ট্যাবলেট সার ব্যবহার করা যেতে পারে এতে করে আলাদা ভাবে অন্য কোনো সার প্রয়োগ করা লাগবে না।

পরিচর্যা ও ফুল ঝরে পড়ে যাওয়া রোধে করনীয়

টব বা হাফ ড্রাম সমেত গাছকে এমন জায়গায় রাখতে হবে যেখানে সবসময় সূর্যের আলো আসে আর ছায়াযুক্ত স্থানে রাখলে কিন্তু কাঙ্ক্ষিত ফলন পাওয়া যায় না আর যেকোনো ফলের গাছ প্রচুর পরিমাণে রোদ পছন্দ করে ফুল ও ফল উৎপাদন করার জন্য। গাছে পানি দেওয়া উচিত একদম সকালে বা বিকেলে সূর্য অস্ত যাওয়ার পর। পানি বুঝে দিতে হবে যাতে গাছের গোড়ায় পানি জমে না থাকে। মাটিতে অল্প টান দেখলে পানি দেওয়া যেতে পারে। গরমকালে পানি দেওয়ার ব্যাপারটা খুব গুরুত্বপূর্ণ কারণ তখন যেন মাটিতে পানির অভাব না হয়। মাঝেমধ্যে টব বা হাফ ড্রামের মাটির আগাছা পরিস্কার করে দেওয়া এবং মাটি নিড়ানি দিয়ে আলগা করে দিতে হবে। মাটি নিড়ানির সময় হাত দিয়ে গোড়ার কাছের মাটি উঁচু করে দিতে হবে যাতে গোড়ায় পানি না জমে থাকে।
 

যদিও ছাদের গাছে খুব একটা বেশি পোকার আক্রমণ হওয়ার কথা নয় তবু কিছু পোকা লাগতেই পারে। জামরুল গাছে সাধারণত মিলিবাগ এবং আরও কিছু পোকার আক্রমণ হয়ে থাকে তাই আগাম সতর্কতা মূলক ব্যাবস্থা হিসাবে ৫ মিলি. নিম তেল ১ লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রতি ১৫ দিন অন্তর অন্তর গাছে ভালো করে স্প্রে করতে পারেন। গাছে ফল এলে পোকার হাত থেকে রক্ষা করতে বাড়তি সতর্কতা হিসেবে জামরুল গুলোকে একটু বড়ো হলে প্লাস্টিকের পলি প্যাক দিয়ে মুড়িয়ে রাখা যেতে পারে। গাছে ফুল না এলে বা ফুল আসার পর তা ঝরে যাওয়া যতটা সম্ভব বন্ধ করতে টব বা হাফ ড্রামের মাটিতে হাফ চা চামচ বোরন সার গোড়া থেকে দূরে মেশানো যেতে পারে। মাটি তৈরি করার সময় যে পরিমাণ সার মেশানো হয়েছিল তাতে গাছ লাগানো থেকে ২/৩ মাস আর কোনো সার না দিলেও চলবে। তার পর থেকে ২০-২৫ দিন অন্তর মাটিতে কম্পোস্ট সার দেওয়া যেতে পারে। ফুল বা ফল এলে তরল সার হিসাবে ভার্মি কম্পোস্ট বা সরিষার খৈল পঁচা পানি মাটিতে দেওয়া যেতে পারে। গাছে ফুল আসা শুরু হলে যেকোনো ভালো মানের পি.জি.আর বা ভিটামিন প্রতি লিটার পানিতে ১ মিলি. মিশিয়ে সম্পূর্ণ গাছে স্প্রে‌ করে প্রয়োগ করতে হবে এতে করে ফুল থেকে ফল সেট হতে অনেক টা সহায়তা করবে।
গাছে পিঁপড়ের সমস্যা হলে ৩ চামচ বোরিক পাউডার ও ৩ চামচ চিনি নিন। বোরিক পাউডারকে একদম গুঁড়ো করে নিন। চিনিতে অল্প পানি মিশিয়ে গুলে গাঢ়ো পেস্ট করে নিয়ে বোরিক পাউডার মিশিয়ে কাঠিতে করে নিয়ে গাছে পিপড়ের আক্রমণের জায়গায় জায়গায় লাগিয়ে রাখুন, পিঁপড়ে চলে যাবে। উনুনের ছাই পেলে তা গাছের ডালপালা ও পাতায় ভালো করে ছিটিয়ে দিলে পোকার হাত থেকে অনেকটা রক্ষা পাওয়া যেতে পারে।